যেভাবে শুরু করবেন ফ্রিল্যান্সিং
চাকরির বাজারে লোকজনের অভাবে অনেকেই বেকার হয়ে ঘুরে বেড়ান। চাকরি করতে হবে এই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যদি দক্ষতা থাকে তাহলে কাজের অভাব নেই। এমন একটা সময়ে আমরা বেড়ে উঠছি যে সময়টা গোটা বিশ্বই হাতের মুঠোয়।
তাই কাজে দক্ষতা অর্জন করে ঘরে বসেই আয় করা সম্ভব। ফলে একদিকে যেমন বেকারত্ব কমবে তেমনিভাবে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল হবে। এই ইন্টারনেট থেকে আয়ের নামই ফ্রিল্যান্সিং বলে জানি। যারা ফ্রিল্যান্সিং করবেন বলে ভাবছেন তাদের অনেকেই দ্বিধাতে পড়েন কোথা থেকে কাজটা শুরু করবেন। কী কাজই বা করবেন। কীভাবে কাজটা করবেন তার চেয়ে বড় কথা কী কাজ পারেন। আগে কাজে দক্ষতা অর্জন করুন। তারপর পথটা আপনা-আপনি সৃষ্টি হতে থাকবে। যাদের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে জানান আগ্রহ তাদের জন্যই আজকের আর্টিকেলটি।
প্রোগ্রামিং: বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট-প্লেসের তুমুল জনপ্রিয় কাজের নামটি হচ্ছে প্রোগ্রামিং। এই খাতে কাজের পরিমাণ যেমন বেশি। তেমনি দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের অনেক অভাব। কেনা প্রোগ্রামিং তুলনামূলক কঠিন কাজ। সহজতো কাজতো যে কেউই পারে। নিজেকে সফল করতে হলে সেই কাজটা করা উচিত যে কাজে অন্যেরা আগ্রহ কম দেখাবে। অনলাইন ইনকামে একজন প্রফেশনাল প্রোগ্রামারের প্রতি ঘণ্টার মূল্য কমপক্ষে ১৫০ ডলার, তথা প্রায় ১৪ হাজার টাকা। প্রোগ্রামিং একটি মজার স্কিল।
রাইটিং: রাইটিং শব্দ শুনে যারা একটু চোখ মুখ ঘোচাবেন। তাদের উদ্দেশে বলা, নিয়ম মাফিক রাইটিং বিষয়টিকে ১ নাম্বারে রাখা উচিত ছিল। কেননা রাইটিং মানে কেবল লেখালিখি নয়। একেকটা আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড রিসার্চ থেকে শুরু করে পাঠকের চাহিদার দিকগুলো বিবেচনায় রাখতে হয়। এছাড়া কোম্পানির ব্রান্ডিং এবং লেখাকে এসইও ফ্রেন্ডলি করতে হয়। যদিও বর্তমানে রাইটিংয়ের উপর ফ্রিল্যান্সিং জব পাওয়া কিছুটা কঠিন। তবে, ভাল লেখক হলে আপনাকে জব লেস থাকতে হবে না। আপনি চাইলে নিজস্ব ব্লগে লিখেও মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় করতে পারবেন। রাইটিংয়ের আরেকটি বিভাগ হল কপিরাইট রাইটার। এ ধরনের ব্যক্তিরা সাধারণত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের পেজ, ডিসক্রিপশন, প্রোডাক্ট, সার্ভিসের লেখাগুলো লিখে থাকে। এদের প্রতি ঘণ্টার রেট প্রায় ২০০ ডলার। আপওয়ার্কে এরকম সেরা অনেক কপিরাইটার রয়েছে। খেয়াল করে দেখুন, এদের প্রতি ঘণ্টার রেট সর্বনিম্ন ১৫ ডলার এবং সর্বোচ্চ প্রায় ১৫০ ডলার।
ডিজাইন: ডিজাইন সৃজনশীল একটি পেশা। পৃথিবীতে কেউ সৃজনশীল হয়ে জন্ম নেয় না। অনুশীলন আর পরিশ্রমের মাধ্যমে মানুষ সৃজনশীল হয়ে উঠে। গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। ডিজাইনের ক্ষেত্রে অনেক বিস্তৃত। যেমন ধরা যায় ইউআই/ইউএক্স, লোগো ডিজাইন, ইলাস্ট্রেশন, প্রোডাক্ট প্যাকেজিং, ফটো এডিটিং, মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল ডিজাইন।
ভিডিও এডিটিং: ইউটিউব আর ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রভাবে ভিডিও এডিটিং এখন অনেক জনপ্রিয় স্কিল। সময়ের সাথে সাথে ফ্রিল্যান্স ভিডিও এডিটরের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। বর্তমানে অধিকাংশ কোম্পানি তাদের ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির জন্য ফ্রিল্যান্সার ভাড়া করে থাকে। শুধু মাত্র আমেরিকাতে একজন ফ্রিল্যান্স ভিডিও এডিটরের প্রতি বছরের আয় প্রায় ৭২ হাজার ডলার। অপরদিকে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে এর পরিমাণ হবে প্রায় ১.২ লক্ষ ডলারের বেশি।মার্কেটিং: মার্কেটিং মানে দোকানে দোকানে গিয়ে পণ্য বিক্রি করা নয়। এটা মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হল –
এসইও
স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ইউটিউব মার্কেটিং
কন্টেন্ট মার্কেটিং
ব্রান্ড স্ট্রাটেজি
মার্কেটিং কনসালটেন্ট
মার্কেটিং প্রোগ্রামিংয়ের মত কঠিন কোন বিষয় নয়। মার্কেটিংয়ের চাহিদা অনেক বেশি। কেননা প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন মার্কেটিং এক্সপার্ট লাগে। তাই, এই সেক্টরে কাজের চাহিদা অনেক বেশি।
ভয়েস প্রদান: আপনার গলার কণ্ঠ যদি শ্রুতিমধুর হয়, তাহলে এই কাজটি আপনার জন্য। ভিডিও কন্টেন্টের মত অডিও কন্টেন্ট বেশ চাহিদা সম্পন্ন। বেশ কিছু সেক্টরে ভয়েসের প্রয়োজন হয়। একজন ভাল মানের ভয়েস প্রদানকারী ব্যক্তি প্রায় ১ হাজার ডলার চার্জ করে থাকে প্রতি ঘণ্টার জন্য। এই খাতে আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট ক্লায়েন্টের কাজ করেন, তাহলেও আপনি প্রতিমাসে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।
কোচিং: কোচিং ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয়ের আরেকটি মাধ্যম। আপনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ, সে বিষয়ে অন্যকে শিক্ষা দিতে পারেন। শেখানোর বিষয় অনেক কিছু হতে পারে।